Published: 12 সেপ্টে 2017

প্রাচীন ভারতের সোনার অস্ত্র

সোনায় নিবেদিতপ্রাণা ভারতীয়রা এই হলুদ ধাতু দিয়ে বিভিন্ন অলঙ্কার, আনুষঙ্গীক এবং অন্যান্য উপাদান ডিজাইন করতে এবং তৈরিতে তাদের প্রচুর শ্রম ব্যয় করেছে৷ প্রাচীন ভারতের রাজারা তাদের অস্ত্রশস্ত্রগুলি সুসজ্জিত করতেন এবং তার মধ্য দিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধি দেখানে ভালোবাসতেন-তাই শুরু হয় সোনার দিয়ে এই অস্ত্র তৈরির ফ্যাশান৷

কিছু অস্ত্র বেশি ক্যারেটের সোনা দিয়ে তৈরি হলেও-সাধারণত হলুদ ধাতুর সাথে প্রায়ই লোহা বা ব্রোঞ্চ মেশানো হত৷ প্রাচীন যুগে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্রের মধ্যে, এখানে কিছু অতি-ব্যবহৃত এবং উচ্চমাত্রায় সজ্জিত অস্ত্রের উদাহরণ দেওয়া হল৷

ফিরিঙ্গী (তলোয়ার): এই বিশাল তলোয়ারটি লম্বায় ছিল 35-38 ইঞ্চি আর এটা দিয়ে যেমন কাটাও যেত তেমনই বিদ্ধও করা যেত৷ মারাঠা সৈন্যদের সাথে এটি বিশেষভাবে যুক্ত ছিল, এটি মুঘলরাও ব্যাপকভাবে ব্যবহার করত৷

এই অতিরিক্ত সজ্জিত তলোয়ারটির হাতল এবং খাপ সোনা দিয়ে সাজানো ছিল, ভিন্ন রঙে মীনাকরী কাজের সাথে সুন্দর প্যাটার্ন দেওয়া হত৷ এই আকর্ষণীয় এবং সমৃদ্ধশীল সজ্জা, যে রাজা এটি বহন করতেন তার রাজ মহিমা উপস্থাপিত করত৷

কাটার (ছুরিকা): এই অস্ত্রটি দক্ষিণ ভারত থেকে উঠে এসেছে এবং এশিয়া মহাদেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়৷ এটির একটি বেশ স্বতন্ত্র হাতল থাকে যেটি ইংরেজি বর্ণ H-আকৃতির হয়; হাতলটি ধরার কেন্দ্রে দু’টি সমান্তরাল লাইন ব্যবহারকারীকে অঙ্গুলীগ্রন্থীর ওপরে কাটারটি ধরতে সাহায্য করে৷ অস্ত্রটির ফলকের দৈর্ঘ্য 12 থেকে 35 ইঞ্জির পরিসরে হত৷

হাতল এবং ফলক সাধারণত স্টিলের তৈরি হত৷ এই অস্ত্রটি সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছিল, যার ওপর সোনার পরত সেটির মালিকের সমৃদ্ধি আরও প্রদর্শিত করত৷ সাধারণত এটি কাটারের হাতলেই করা হত যা আবার রং দিয়েও সজ্জিত করা হত৷ কাটারের খাপটিও সোনার তৈরি হত৷

ছুরিকার আরেকটি ধরণ ছিল খঞ্জর; যেটি ওমানে উদ্ভূত হয় তবে ভারতেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হত৷ খঞ্জরের হাতল ছুরির মতই ছিল, তবে ফলকটি তলোয়ারের তুলনামূলক ছোট সংস্করণ ছিল৷ খঞ্জর কটি-বন্ধের সাথে আঁটকানো থাকতো এবং সাধারণত বিশেষ আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে বের করা হত৷ ছোরাটির হাতল এবং খাপ সোনা এবং অন্যান্য ধাতু দিয়ে তৈরি করা হত৷

মহারাজা এবং অন্যান্য রাজকীয় ব্যক্তিবর্গও তাদের ঢাল সোনা দিয়ে আচ্ছাদিত করা জন্য পরিচিত ছিল৷