Published: 27 সেপ্টে 2017

ভারতের সোনার মুকুট

সোনার পাখির দেশ ভারত মূলত তার মহারাজাদের জন্য এবং তাদের ধনসম্পত্তি বিশেষত সোনার জন্য পরিচিত ছিল। রাজ পরিবারগুলি ধনবত্তায় জীবনযাপন করত এবং সিংহাসন, অলঙ্কার, অস্ত্র, পোশাক এবং বিলাসবহুলদ্রবের মত বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সমৃদ্ধি প্রদর্শন করত। তারা তাদের ক্ষমতা এবং সামাজিক মর্যাদার তাৎপর্য নিজের এবং অন্যান্য রাজ্যে বোঝানোর জন্য সোনা ব্যবহার করত। এই ক্ষমতাশীল পুরুষ ও মহিলারা যে মুকুটগুলি পরত সেগুলি সবসময় সোনার তৈরি হত।

যদিও, এদের মধ্যে বেশিরভাগ মুকুটই হারিয়ে গেছে, তবুই এই প্রবন্ধে আমরা এদের মধ্য থেকে দুটি উদাহরণ দেব যা আজও রয়ে গেছে:

সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদূর শাহের মুকুট

1857 সালের ভারতীয় যুদ্ধের পর, দিল্লির রাজা এবং শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদূর শাহ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বারা বার্মায় নির্বাসিত হয় এবং ভারতের সরকার ব্রিটিশরা অধিগ্রহণ করে। ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির নিকটবর্তী হলে, তার সোনার মুকুট ব্রিটেনে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং রানি ভিক্টোরিয়া সেটি £500 মূল্যের বিনিময়ে কিনে নেন। এই মুকুটটি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ লাইব্রেরির রাজকীয় সংগ্রহে জনগণের জন্য প্রদর্শন করা আছে।

মুঘলদের তিয়ারা

জমকালো মুঘল যুগের আরেকটি মুকুট ছিল অওধের মুকুট, যেটি পরিচিত ছিল ‘মুঘলদের তিয়ারা’ নামে। এই অওধের মুকুটটি আসলে ছিল ভারতের উত্তরাঞ্চলের এবং এটি মুঘল আমলের অন্যতম জনপ্রিয় একটি মুকুট ছিল যা 18শ শতকের মুঘল সম্রাটরা পরত। এটি খাঁটি সোনা ও সোনার ফলক ব্যবহার করে তৈরি হয়েছিল। মুকুটে খচিত রত্নগুলির মধ্য থেকেও হলুদ ধাতু ঝলমল করত। নিখুঁত ডিজাইন এবং প্যাটার্ন প্রাচীন যুগের সূক্ষ্মতম শিল্পকর্মের নিদর্শন দেখিয়েছিল। এই তিয়ারা পরবর্তিতে অওধের তিলকদাররা সপ্তম এডওয়ার্ডকে উপহার দিয়েছিল।

সোনার মুকুটের সাথে অতিরিক্তভাবে, ভারতের রাজারা তাদের মস্তক বা পাগড়ি বিভিন্ন অলঙ্কারে সজ্জিত করত। এই অলঙ্কারগুলির মধ্যে নেকলেস বা সোনার চেন থাকত যা একটি দণ্ড থেকে ঝোলানো থাকত এববং পাগড়িটাকে ঢেকে সেটি কপালে নেমে আসত। পালক এবং ভেলভেটের জমিন রাজকীয় পাগড়ির আকর্ষণীয় চেহারাকে আরও বাড়িয়ে দিত।

প্রাচীনকালে রাজা ও তাদের পরিবারবর্গের মুকুট এবং অন্যান্য অলঙ্কার তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনকে প্রদর্শিত করত।