Published: 05 সেপ্টে 2017

ভারতের সোনার সিংহাসন

বলা হয় যে হাজার হাজার বছর আগে, একটি শিশু নদীর স্রোতের বরাবর একটি উজ্জ্বল হলুদ টুকরো পেয়েছিল আর এইভাবেই মানবজাতি একটি অপূর্ব সুন্দর ধাতুর সাথে পরিচিত হয় যার নাম “সোনা”। হলুদ ধাতুর ব্যুৎপত্তির পিছনে অনেক গল্পের মধ্যে এটি একটি। যদিও, আমরা নিশ্চিতভাবে জানি যে এই ধাতু বিশ্বের বর্তমান সমস্ত সভ্যতা এবং সংস্কৃতি জুড়ে ঈশ্বর, ক্ষমতা এবং সমৃদ্ধির সাথে যুক্ত।

প্রাচীনকালে, যখন কোন অর্থ ছিলনা আর অর্থনীতির আবিষ্কার হয়নি, তখন সোনা গৌরব এবং সমৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করত। এটি শুধু ধাতু নয়, সাথে এটি ছিল একটি আকাঙ্খিত পণ্য যা সমৃদ্ধশীল শাসকরা তাদের পোশাক বা অলঙ্কারকে সজ্জিত করার জন্য ব্যবহার করত। রাজকীয় শাসকরা তাদের মুকুট এবং মনমুগ্ধকর সিংহাসনগুলি সম্পূর্ণ সোনা দিয়ে তৈরি করত।

ভারত জনপ্রিয়ভাবে “সোনে কি চিড়িয়া” (সোনার পাখি) নামে পরিচিত ছিল, যার অর্থ সোনার পাখির দেশ। ভারতের শাসকগণ প্রচুর পরিমাণে মূল্যবান ধাতুটির মালিক ছিল যার ধারণা বর্তমান যুগে আমরা করতে পারবনা। এই শাসকরা তাদের সিংহাসনগুলি সোনা দিয়ে সাজাতো এবং সেগুলি এতোটাই চিত্তাকর্ষক ছিল যে পৃথিবী আজও তা মনে করে, লালিত করে এবং ভারতের সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি স্বরূপ প্রদর্শিত করে। এই প্রবন্ধ আপনাকে সেই সমস্ত সিংহাসনের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাবে যা বিশ্ব আজও মনে রেখেছে!

মুঘলদের মালিকানাধীন ময়ূর সিংহাসন:

সূত্র অনুযায়ী এই সিংহাসনটি বর্তমানে তেহরানে আছে বলে মনে করা হয়। আসলে, এই সিংহাসনটি মুঘলদের ছিল এবং শাহজাহান এটি অনুমোদিত করেছিলেন। INRএই সিংহাসনটিতে সেই সময়ের ভারতীয় মূল্যে 90 লাখ টাকার সোনা ছিল।

মাইসোরের সোনার সিংহাসন

এই সুন্দর সিংহাসনটি মাইসোরের ওয়াদিয়র রাজবংশের সম্পত্তি। এটি ভারতের শাসকদের অনন্য সিংহাসনগুলির অন্যতম একটি সিংহাসন। ইতিহাস বলে এই সিংহাসনটি আসলে হস্তিনাপুরের পান্ডবদের ছিল। কিলো কিলো সোনা এবং মূল্যবান ধাতু দিয়ে সজ্জিত এই সিংহাসনটিতে খচিত আছে ত্রয়ী দেবতা, হাতি, ঘোড়া এবং নারী মূর্তি; এটি সত্যিই একটি সেরা শিল্প কর্ম।

এই সিংহাসনটি চিন্নাড়া সিংহাসনা বা রত্ন সিংহাসনা (কন্নড় ভাষায় সোনার সিংহাসন) নামেও পরিচিত। দসেহরার শুভ মুহুর্তে, এই সিংহাসনটি সাধারণ জনগণের সম্মুখে প্রদর্শিত হয়।

মহারাজা রনজিৎ সিংয়ের সোনার সিংহাসন

এই সিংহাসনটি বর্তমানে লন্ডনের জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়। সোনার দামি পাত দ্বারা শোভিত এই সিংহাসনটির ডিজাইনটিতে পদ্মফুলের আকৃতি রয়েছে।

বাঘের আকৃতির টিপু সুলতানের রাজকীয় সিংহাসন

এই শিল্পকর্মটিতে উজ্জ্বল সোনায় আসল বাঘের আকৃতি দেওয়া হয়েছে আর সাথে অত্যন্ত মূল্যবান রত্ন দিয়ে তা শোভিত করা হয়েছে। প্রায় 8ফিট লম্বা এবং 11ফিট চওড়া এই চিত্তাকর্ষক সিংহাসনটি ব্রিটিশ আক্রমণকারীরা ধ্বংস করে দেয়।