Published: 04 সেপ্টে 2017

কিভাবে প্রাচীন রোমানরা ভারতকে সোনার দিক দিয়ে সমৃদ্ধশীল করে তোলে

অভিজাত রোমানদের ভারতীয় চারুশিল্প, মশলা, গহনা, সুন্দর বয়ন করা কাপড়ের মত বিলাসবহুল দ্রব্যের প্রতি দারুন অনুরক্ত ছিল। রোমান লেখক এবং সহজাত দার্শনিক প্লিনি দ্য এলডার, ভারতীয় বিলাসবহুলদ্রব্যের প্রতি রোমানদের আসক্তি বর্ণনা (accounts of the Roman addiction to Indian luxury products) বইটি লিখেছেন। 1ম শতাব্দিতে লেখা তাঁর এই বইটিতে উল্লেখ আছে রোমের প্রচুর পরিমাণ সোনা ভারতে নিঃসৃত হয়।

আর.এস শর্মার ভারতীয় সামন্ততন্ত্র (Indian Feudalism, 1965) বইটিতে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে প্লিনি আসলে দুঃখ করেছিলেন মশলা, মসলিন, সিল্ক এবং অন্যান্য দামি বিলাসবহুল দ্রব্যের বিনিময়ের জন্য প্রচুর পরিমাণে সোনা রোম থেকে দক্ষিণ ভারতে চলে এসেছিল, যার দীর্ঘ-মেয়াদী মূল্য সোনার মত ছিলনা। প্লিনি বিশ্বাস করতেন যে ভারতীয় রপ্তানি, যা সোনার জন্য বিনিময় হত, তা ছিল “অনুৎপাদনশীল বিলাসবহুল দ্রব্য” যার মূল্য সোনার তুলনায় সামান্যই ছিল আর রোম সেটা অবলীলাক্রমে ছেড়ে দিয়েছিল।

একটি সময়, রোমানরা সোনাকে একটি উচ্চ মূল্যে স্থাপন করে এবং বুঝতে পারে এটি কেবলমাত্র মুদ্রা নয়, এটির নমনীয়তা এবং প্রসারণীয়তার জন্য এটি একটি বিলাশবহুল দ্রব্য। প্লিনি দামি কাপড়ে সোনা বুননের সময় সোনার উচ্চ মূল্যের বর্ণনাও লিখেছেন- যেখানে সোনার জন্য তার লালসার সমালোচনা থেকেই যায়, যা ডেকব ইসাগের তার চারুকলা এবং সমাজে প্লিনি: চারুকলার ইতিহাসে দ্য এলডার প্লিনির অধ্যায় (Pliny on Art and Society: The Elder Pliny's Chapters on The History Of Art) বইতে উল্লেখ করেছেন। -- “ভারত,চীন এবং আরব উপদ্বীপ প্রতি বর্ষে সংরক্ষণপ্রবণ হিসাবে আমাদের সাম্রাজ্য থেকে এক শত মিলিয়ন স্যাসটার্স নিয়েছিল: যা আমাদের বিলাসবহুল দ্রব্য ও মহিলাদের জন্য খরচ হয়। এই আমদানির কত শতাংশ ঈশ্বরের বা মৃতের আত্মার জন্য বলিতে অভিপ্রেত?”-প্লিনি। হিস্টোরিয়া ন্যাচুরিয়া, 12.41.84

তামিল সঙ্গমের প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যও এইরকম রোমান ব্যবসায়ীদের কথা উল্লেখ করেছিল। ‘বিশ্বের বাণিজ্য শিল্পের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ (A Short History of the World's Shipping Industry) বইতে চার্লস আর্নেস্ট ফেলি সঙ্গম থেকে এই রকম একটি উল্লেখ সম্পর্কে বলছেন: “সুন্দরভাবে তৈরি যবনদের জাহাজ সোনায় বোঝাই হয়ে আসে এবং কোলাহলে অনুরোণিত হতে হতে গোলমরিচ এবং মুজেরিসের সাথে ফেরত যেত।”

বারবারিকাম (আধুনিক করাচি), ভারুচ (গুজরাট), মুজিরিস এবং দক্ষিণ ভারতের আরিকামেদুর বন্দর বন্দর ব্যবসার মূল কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হত, যেখানে বেশিরভাগ রোমানরা সোনা নিয়ে আসত এবং যেখান থেকে বেশিরভাগ ভাগ অংশ বেড় করা হত, মূলত মন্দিরগুলিতে।